সময়রেখা – লতিফুর রহমান

  • ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জনাব লতিফুর রহমান ১৯৪৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির একটি সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জনাব মজিবুর রহমান চা ও পাটশিল্পে বিশেষ ব্যবসায়িক অবদানের কারণে ‘খান বাহাদুর’ উপাধি পেয়েছিলেন।

    ১৯৪৫
  • ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলের মধ্য দিয়ে লতিফুর রহমানের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। এরপর তিনি ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমুন্ড স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষা দেন।

    ১৯৫৬
  • ১৯৬৫ সালে শাহনাজ রহমানকে বিয়ে করেন লতিফুর রহমান। তাঁরা একই সঙ্গে কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের কোলজুড়ে এসেছে তিন মেয়ে—সিমিন রহমান, শাজরেহ হক, শাজনীন রহমান এবং এক ছেলে—আরশাদ ওয়ালিউর রহমান।

    ১৯৬৫
  • ঢাকায় ফিরে আসার পর লতিফুর রহমান চাঁদপুরের পারিবারিক পাটকল ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডে নির্বাহী হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি সরাসরি কারখানায় কাজ করতেন। মূলত পাটকল পরিচালনার খুঁটিনাটি বিষয় সরাসরি সামনে থেকে দেখা ও শেখার মাধ্যমেই তাঁর পেশাজীবন শুরু হয়।

    ১৯৬৬
  • এই বছর লতিফুর রহমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। কারণ, এ বছরই রহমান পরিবারের সবচেয়ে বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মূল আয়ের উৎস ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডকে সরকার জাতীয়করণ করে। ওই সময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাট একটি বৃহৎ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতো। ১৯৪৭-৪৮ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট রপ্তানি হওয়া পাটের মধ্যে ৮০ শতাংশই পূর্ব বাংলা থেকে রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৪৬ শতাংশই এসেছিল পাট থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সরকার দেশের পাটকলগুলোকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে এনে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয়।

    দেশের প্রতিষ্ঠিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া লতিফুর রহমান এবার বাধ্য হয়ে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করলেন। অতঃপর ১৯৭২ সালের ৬ মে টি হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালুর মাধ্যমে চা রপ্তানির ব্যবসায় নাম লেখান লতিফুর রহমান। টি হোল্ডিংস লিমিটেড বর্তমানে ট্রান্সকম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

    ১৯৭২
  • লতিফুর রহমান বাংলদেশ এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিইএ) সভাপতি নির্বাচিত হন। সংগঠনটি বর্তমানে বাংলদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) নামে পরিচিত। ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাস থেকে ১৯৯১ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৮৯
  • ১৯৯৩ সালে লতিফুর রহমান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অভিজাত ব্যবসায়ী সংগঠন দ্য মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩, ১৯৯৪, ২০০০, ২০০১, ২০০৬, ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে ৭ মেয়াদে তিনি এমসিসিআইয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৩
  • একই বছরের ৯ অক্টোবর লতিফুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ২৪ বছর ধরে তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৪
  • লতিফুর রহমান ও শাহনাজ রহমানের ছোট মেয়ে শাজনীন রহমান ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল মাত্র ১৬ বছর বয়সে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

    ১৯৯৮
  • ২০০০ সালে লতিফুর রহমান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত টানা ৯ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০০
  • ২০০১ সালে লতিফুর রহমান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। এরপর থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি সদস্য পদে বহাল থাকেন।

    ২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমান মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতি’ শীর্ষক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

    ২০০১
  • ২০০২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেস্ট বিজনেস এক্সিকিউটিভ অব দ্য ইয়ার পুরস্কার লাভ করেন।

    ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সম্মানিত সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়।

    ২০০২
  • ২০০৩-২০০৪ মেয়াদে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন লতিফুর রহমান। পরে ২০০৪-২০০৫, ২০০৭-২০০৮ এবং ২০০৮-২০০৯ মেয়াদেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লতিফুর রহমান বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের গভর্নিং বডির মনোনীত সদস্য ছিলেন।

    ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চার মেয়াদে লতিফুর রহমান শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের সহায়ক সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশের অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৩
  • ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) বোর্ডের ‘সম্মানিত সদস্য’ ছিলেন লতিফুর রহমান।

    ২০০৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত লতিফুর রহমানকে ‘সম্মানিত সদস্য’ পদে মনোনীত করে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।

    ২০০৭
  • ২০০৮ সালের ২৩ জুন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশ বেটার বিজনেস ফোরামের ‘সম্মানিত সদস্য’ পদের জন্য নির্বাচিত করে।

    ২০০৮
  • ২০০৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমান ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে টানা ১১ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৯
  • ২০১২ সালের ৭ মে লতিফুর রহমানকে অসলো বিজনেস পিস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে নরওয়েভিত্তিক বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন, অসলো। ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ ও ন্যায়পরায়ণ একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এখানে। ব্যবসা-বাণিজ্যের দুনিয়ায় এই পুরস্কারকে অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিচারকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ একটি দল এই পুরস্কারের বিজয়ী নির্ধারণ করে থাকে।

    লতিফুর রহমান ছাড়া এখন পর্যন্ত টাটা গ্রুপ অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যন রতন টাটা (২০১০), ভার্জিন গ্রুপের সিইও স্যার রিচার্ড ব্যানসন (২০১৪), টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কসহ (২০১৭) বিশ্বের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন।

    ২০১২ সালের ১৮ মে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পান লতিফুর রহমান।

    ২০১২
  • ২০১৪ সালের ২৭ জুন জেনেভায় আয়োজিত প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) ২০২তম সভায় লতিফুর রহমান তিন বছরের জন্য এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হন।

    ২০১৪
  • মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালে লতিফুর অ্যান্ড শাহনাজ ফাউন্ডেশনের সূচনা হয়। এখন পর্যন্ত আর্থিকভাবে অসচ্ছল অসংখ্য ক্যানসার রোগীর চিকিৎসার খরচ দিয়েছে এই ফাউন্ডেশন।

    ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় বন্ধুদের বাঁচাতে লতিফুর রহমানের নাতি ও বড় মেয়ে সিমিন রহমানের ছোট ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন নিহত হন। সেখানে দুই বন্ধুকে বাঁচাতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে বরণ করেছিলেন তরুণ ফারাজ।

    ২০১৬
  • দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৭ সালে প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন লতিফুর রহমান।

    লতিফুর রহমান পেশাগত ক্ষেত্রে সামাজিক দায়িত্ববোধ আর ন্যায়পরায়ণতার অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করে ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই ‘সার্ক আউটস্ট্যান্ডিং লিডার’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। ভারতের বাইরের প্রথম দেশের কোনো নাগরিক হিসেবে তিনি এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

    ব্যবসা–বাণিজ্য খাতের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সততার চর্চার জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দ্য ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউকেবিসিসিআই) লতিফুর রহমানকে ‘দ্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে।

    ২০১৭
  • ২০২০ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চেওরা গ্রামে নিজ বাড়িতে লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বনানী কবরস্থানে মেয়ে শাজনীন রহমান ও নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।

    ২০২০
  • ১৩৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৮৮৫ সালে ট্রান্সকমের চা-বাগান আর পাটকলের মধ্য দিয়ে ট্রান্সকমের (তৎকালীন জলঢাকা টি এস্টেট, ডুয়ার্স, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ) ঐতিহ্যের সূচনা হয়। পাটকল ও অন্যান্য ব্যবসার জাতীয়করণের পর ১৯৭৩ সালে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে ট্রান্সকমকে বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায় গ্রুপে পরিণত করেছেন। ট্রান্সকম ২০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার বার্ষিক লেনদেনের (টার্নওভার) রেকর্ড গড়েছে। ওষুধ, পানীয়, ইলেকট্রনিকস, ভোগ্যপণ্য, চা এবং গণমাধ্যমসহ অন্যান্য ক্ষেত্র মিলিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপ বর্তমানে দেশের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয়, দ্রুত বর্ধনশীল এবং বৈচিত্র্যময় একটি ব্যবসায়িক গ্রুপ হিসেবে পরিচিত। সূচনালগ্ন থেকেই দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণ ট্রান্সকম গ্রুপকে বিশেষ এক উচ্চতায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।

    ১৮৮৫
  • ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রহমান পরিবার রাজনগর টি এস্টেট, সাকেরা টি এস্টেট এবং বৃহত্তর সিলেটের উত্তরবাগ ও ইন্দুনগর টি এস্টেটের সঙ্গে জলঢাকা টি এস্টেট অদলবদল করার সিদ্ধান্ত নেন।

    ১৯৪৭
  • ক. সিলেট জেলার মনিপুর টি এস্টেটের মাধ্যমে ১৯৫৫ সালের ৫ জুলাই মনিপুর চা কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। কোম্পানিটি উন্নত যন্ত্রসমৃদ্ধ আধুনিক কারখানা এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগানে ৬৬ বছর ধরে গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে উন্নত মানের চা উৎপাদন করে আসছে।

    খ. মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার পাহাড়ি এলাকায় ১৯৬৫ সালে মেরিনা চা কোম্পানির পথচলা শুরু হয়। একইভাবে ৬৫ বছর ধরে এই কোম্পানিও আধুনিক কারখানা আর ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগানে মানসম্পন্ন চা উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।

    গ. ১৯৬২ সালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সাইফ টি এস্টেটের সঙ্গে যৌথভাবে আত্মপ্রকাশ করে এম রহমান চা কোম্পানি। ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগান আর আধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ কারখানায় ৫৯ বছর ধরে উন্নত মানের চা উৎপাদন করে আসছে কোম্পানিটি।

    ১৯৫৫
  • ১৯৬১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চাঁদপুরে ডব্লিউ রহমান জুট মিলস নামে প্রথম বাঙালি মালিকানাধীন পাটকল যাত্রা শুরু করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৬৬ দশমিক ৮৯ একর জায়গা নিয়ে কোম্পানিটি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মালিকানাধীন বৃহত্তম পাটকলে পরিণত হয়। লতিফুর রহমানের বাবা মজিবুর রহমান পরিচালিত ডব্লিউ রহমান পাটকলটি পরে পারিবারিক ব্যবসায় সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

    ১৯৬১
  • এই বছর লতিফুর রহমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। কারণ, এ বছরই রহমান পরিবারের সবচেয়ে বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মূল আয়ের উৎস ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডকে সরকার জাতীয়করণ করে। ওই সময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাট একটি বৃহৎ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতো। ১৯৪৭-৪৮ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট রপ্তানি হওয়া পাটের মধ্যে ৮০ শতাংশই পূর্ব বাংলা থেকে রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৪৬ শতাংশই এসেছিল পাট থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সরকার দেশের পাটকলগুলোকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে এনে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয়।

    দেশের প্রতিষ্ঠিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া লতিফুর রহমান এবার বাধ্য হয়ে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করলেন। অতঃপর ১৯৭২ সালের ৬ মে টি হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালুর মাধ্যমে চা রপ্তানির ব্যবসায় নাম লেখান লতিফুর রহমান। টি হোল্ডিংস লিমিটেড বর্তমানে ট্রান্সকম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

    ১৯৭২
  • সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের (দোলমার জিএমবিএইচ এসএ) সঙ্গে টি হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবসায়িক চুক্তির মাধ্যমে লতিফুর রহমানের প্রথম আন্তর্জাতিক বিনিময় ব্যবসার শুরু হয়। ব্যবসায়িক চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানি করতেন এবং কীটনাশক আমদানি করতেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক বিনিময় প্রথাভিত্তিক ব্যবসা।

    ব্যবসা পরিচালনাসংক্রান্ত কার্যক্রম আরও সহজ করতে ওই বছরই চট্টগ্রামে টি হোল্ডিংস লিমিটেডের একটি শাখা কার্যালয় চালু করা হয়।

    ১৯৭৩
  • বাংলাদেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে টি হোল্ডিংস লিমিটেড তাদের রপ্তানির পরিসর আরও বাড়ায়। এ বছর প্রতিষ্ঠানটি মিসরের সরকারি প্রতিষ্ঠান মিসর ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্টের মাধ্যমে মিসরে চা রপ্তানি শুরু করে। পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও পাকিস্তানে চা রপ্তানি শুরু করে টি হোল্ডিংস লিমিটেড।

    ১৯৭৭
  • আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যবসায়িক বিস্তৃতির অংশ হিসেবে টি হোল্ডিংস লিমিটেড এবার পেট্রোলিয়াম ও টেলিযোগাযোগ খাতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করে।

    ১৯৭৮
  • ১৯৮১ সালের ১০ মার্চ বর্তমান ট্রান্সকম গ্রুপের মূল প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়।

    এ বছরই লতিফুর রহমান বিশেষ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দ্রে অ্যান্ড সি নামের সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। এই বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তটি তাঁর ব্যবসাজীবনে আবারও সফলতা এনে দেয়, যা ট্রান্সকমের সম্ভাবনাময় যাত্রা আরও সহজ করে তোলে।

    ১৯৮১
  • লতিফুর রহমানের চেষ্টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান নেসলে প্রথমবারের মতো তাদের পণ্য বাংলাদেশে বিপণন শুরু করে। ওই সময় ট্রান্সকম লিমিটেড নেসলের সব ধরনের পণ্য বাংলাদেশে আমদানি ও পরিবেশনার বিশেষ স্বত্ব পায়।

    ১৯৮২
  • ১৯৮৩ সালের ১৯ জানুয়ারি সরকার ডব্লিউ রহমান জুট মিলসের সাবেক মালিক অর্থাৎ রহমান পরিবারের কাছে পাটকলের ৫১ শতাংশ মালিকানা ফিরিয়ে দেয় সরকার। পাটকলের বিরাষ্ট্রীয়করণ উদ্যোগের আওতায় বাকি ৪৯ শতাংশ মালিকানা পাট মন্ত্রণালয় রেখে দেয়।

    ১৯৮৩
  • ১৯৮৭ সালের ২১ অক্টোবর বিক্রয় ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিডিসিএল) যাত্রা শুরু করে। টিডিসিএল এখন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বিক্রয় ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভোগ্যপণ্য ব্র্যান্ড ওষুধ এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত যন্ত্রপাতির বিক্রয় ও পরিবেশক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

    ১৯৮৭
  • লতিফুর রহমানের প্রচেষ্টায় ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক ওষুধ প্রতিষ্ঠান অরগ্যানন হোল্ডিংস বিভি-এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান অরগ্যানন বাংলাদেশ (বর্তমানে নুভিসতা ফার্মা লিমিটেড) টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তাদের পণ্য বিপণন, বিক্রয় ও সরবরাহ শুরু করে।

    ২০ মার্চ রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিমা খাতে প্রবেশ করেন লতিফুর রহমান। তিনি ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এরপর ১৯৮৯, ১৯৯৭ ও ২০০৫ সালেও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৮৮
  • যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্কুইব ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাওরোজ ওয়েলকাম অ্যান্ড কোম্পানি তাদের সব ধরনের পণ্য টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিপণন, বিক্রয় ও সরবরাহ শুরু করে।

    টিডিসিএল এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়ক প্রতিষ্ঠান স্মিথক্লাইন অ্যান্ড ফ্রেঞ্চের (এসকেঅ্যান্ডএফ) পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশনার সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ১৯৮৯
  • ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্মিথক্লাইন অ্যান্ড ফ্রেঞ্চের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচাম কোম্পানির সংযুক্ত হওয়ার সময় এসকেএফের বাংলাদেশ অংশের পরিচালনার ভার ট্রান্সকম অধিগ্রহণ করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের ঘটনা। প্রতিষ্ঠানটি ট্রান্সকম অধিগ্রহণের পর এটির নাম হয় এসকেএফ বাংলাদেশ। পরে এটির নাম পরিবর্তন করে হয় এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এসকেএফ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও দ্রুত বর্ধনশীল ওষুধ কোম্পানি।

    ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে নাম লেখান লতিফুর রহমান। মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের মালিকানায় ১৯৯১ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ও সর্বাধিক উদ্ধৃত ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা।

    ১৯৯০
  • সুইজারল্যান্ডভিত্তিক স্যান্ডোজ ফার্মা টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে পণ্য বিপণন, বিক্রয় ও পরিবেশনা শুরু করে।

    ১০ বছরের ধারবাহিক ব্যবসায়িক উন্নতির পর ১৯৯২ সালের ৪ মার্চ নেসলে এসএ এবং ট্রান্সকম লিমিটেডের যৌথ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। সূচনালগ্নে ওই বছরের ১২ জুন লতিফুর রহমান কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।

    ১৯৯২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ট্রান্সকম গ্রুপ নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এনভির সহায়ক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেডের একটি বড় অংশ অধিগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ফিলিপসের বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় করত। দেশের ইতিহাসে তখন এটিই ছিল ঋণসুবিধা ব্যবহার করে কোম্পানি অধিগ্রহণের সবচেয়ে বড় ঘটনা।

    একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের একটি বড় অংশ অধিগ্রহণ করে ট্রান্সকম গ্রুপ। বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তখন জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্র্যান্ড ফিলিপসের উৎপাদন ও বিপণন করত।

    একই বছরের ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সব সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এনভির সহায়ক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে ট্রান্সকম গ্রুপ।

    ১৯৯২
  • ট্রান্সকম লিমিটেড ও ফিলিপস বাংলাদেশের যৌথ চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ৪ মার্চ ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকসের যাত্রা শুরু হয়।

    সুইজারল্যান্ডভিত্তিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান নেসলের পণ্য উৎপাদনের জন্য ১৯৯৩ সালে লতিফুর রহমান গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি কারখানা চালু করেন। ওই বছরের ৪ নভেম্বর থেকে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশেই তাদের পণ্য উৎপাদন শুরু করে। এরপর ১৯৯৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখাসংবলিত চালানটি তৈরি করা হয়।

    ১৯৯৩
  • ১৯৯৪ সালের পয়লা মার্চ থেকে ফরাসি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লেস ল্যাবরেটরিজ সার্ভিয়ার ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাদের পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশন শুরু করে।

    ১৯৯৪
  • ফিলিপস এনভির সঙ্গে আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৫ সালের ১ মার্চ ট্রান্সকম লিমিটেড বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেডের ট্রেডমার্ক লাইসেন্স অধিগ্রহণ করে। একই দিনে ট্রান্সকম লিমিটেড ফিলিপস লাইটিং হোল্ডিং বিভির সঙ্গে আরেকটি নতুন চুক্তি করে যেন বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ও ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ফিলিপস ব্র্যান্ডের ট্রেডমার্ক লাইসেন্স নিতে পারে। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ফিলিপস ব্র্যান্ডের ট্রেডমার্ক ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক লাইটিং পণ্য উৎপাদনের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়।

    ১৯৯৫
  • ফরাসি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ল’রিয়াল প্যারিস ট্রান্সকম লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১৯৯৬ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে তাদের পণ্য বিক্রয় ও বাজারজাত করা শুরু করে।

    ১৯৯৬
  • পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা নেসলে এসএর কাছে বিক্রি করে দেয় ট্রান্সকম লিমিটেড। ওই সময় নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড নেসলের শতভাগ সহায়ক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। যদিও মালিকানা বিক্রির পরেও নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে লতিফুর রহমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি টানা ২৫ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে তিনি ২০১৭ সালে স্বেচ্ছায় এই দায়িত্ব থেকে সরে আসেন।

    ১৯৯৮ সালে মিডিয়াস্টার লিমিটেডের অধীনে প্রথম আলো যাত্রা শুরু করে। যেটি বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রকাশিত ও পঠিত দৈনিক পত্রিকা। দেশের বাইরেও প্রকাশিত হয় প্রথম আলো। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকা সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট (www.prothomalo.com) বর্তমানে পৃথিবীর এক নম্বর বাংলা ও বাংলাদেশি ওয়েবসাইট। অ্যালেক্সা র‍্যাংকিংয়ে প্রথম আলো বাংলাদেশের চতুর্থ ও পৃথিবীর সেরা ৫০০ ওয়েবসাইটের মধ্যে অবস্থান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো ভাষার গণমাধ্যম ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রথম আলো ডটকমের অবস্থান পঞ্চম। প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ১ কোটি ৩০ লাখ নিয়মিত পাঠক ও ১০০ কোটি অ্যাড ইমপ্রেশন রয়েছে। প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে দেড় কোটির বেশি লাইক আছে। এ ছাড়াও মিডিয়াস্টার লিমিটেডের রয়েছে মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর আলো, বিজ্ঞানচিন্তা, ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন প্রতিচিন্তা এবং প্রকাশনা সংস্থা প্রথমা প্রকাশন।

    এ ছাড়া রয়েছে এবিসি ৮৯.২ এফএম রেডিও স্টেশন। ২০২১ সালের ১২ জুলাই যাত্রা শুরু করেছে ডিজিটাল বিনোদনের নতুন ধারা ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম চরকি।

    লতিফুর রহমান অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক সিমেন্ট কোম্পানি হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেডের (আগের নাম হুন্দাই সিমেন্ট) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি ১৮ বছর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৮
  • ১৯৯৯ সালের ৪ নভেম্বর ট্রান্সকম গ্রুপের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড ছাপাখানা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। উন্নত ও দ্রুত মুদ্রণ প্রযুক্তির ছাপাখানা এটি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় এর ছাপাখানা রয়েছে।

    ১৯৯৯
  • ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড (টিবিএল) ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (তালিকাভুক্ত নয়) হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের (বিবিআইএল) কাছ থেকে পেপসিকো অধিগ্রহণ করে টিবিএল। তখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান পেপসিকোর ফ্র্যাঞ্চাইজি পায় টিবিএল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত পেপসি, সেভেনআপ, মিরিন্ডা, মাউন্টেন ডিউ, পেপসি ডায়েট, ট্রপিকানা ফ্রুটস ও স্লাইসের উৎপাদন, বিপণন ও পরিবেশনা করে আসছে টিবিএল।

    ২০০০
  • টঙ্গীতে অবস্থিত গ্লোবাল বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ব্রিস্টল-মায়ার্স স্কুইবের উৎপাদন কারখানা অধিগ্রণ করে এসকেএফ। বর্তমানে এটি এসকেএফের প্রধান কারখানা।

    পোলট্রি, গবাদি ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরির পরিকল্পনা প্রাণিস্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যবসায় নামে এসকেএফ।

    ২০০১
  • পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেপসিকোর ব্র্যান্ড লেইস চিপস বাংলাদেশে বিক্রয় ও পরিবেশন শুরু করে।

    অ্যালারগান-হংকং লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশনের কাজ শুরু করে।

    সিঙ্গাপুরের ব্যবসা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিঙ্গাপুর ট্রেড ডেভেলপমেন্ট বোর্ড লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশের সম্মানিত ব্যবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করে। ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ছয় বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০২
  • ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। ট্রান্সকম ফুডস তখন ইয়ামের বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়, যা পরবর্তীতে আমেরিকান চেইন রেস্টুরেন্ট পিৎজা হাটের সঙ্গে যাত্রা শুরু করে। পিৎজা হাট বাংলাদেশে প্রথম আন্তর্জাতিক চেইন রেস্টুরেন্ট।

    ২০০৩ সাল থেকে এসকেএফ আন্তর্জাতিক বাজারে ওষুধ রপ্তানি করা শুরু করে।

    ২০০৩
  • এসকেএফের ডেডিকেটেড অ্যান্টিবায়োটিক প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন লতিফুর রহমান।

    ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর হেইঞ্জ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ২০০৫
  • ইয়াম! ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ডের বিস্তৃতি হিসেবে ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেড কেএফসি চালু করে। সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৬টি পিৎজা হাট ও ২৩টি কেএফসি আউটলেট চালু করেছে।

    ২০০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লিনডে বাংলাদেশ লিমিটেডের (আগের নাম বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেড) পরিচালক মনোনীত হন। ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ইনসুলিনের পথপ্রদর্শক ডেনমার্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক এসএ ২০০৬ সালের ৯ মার্চ তাদের পণ্য বাংলাদেশে বিক্রয় ও পরিবেশনের জন্য ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ২০০৬
  • ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি জার্মানভিত্তিক কোম্পানি হেটিচ এশিয়া প্যাসিফিক পিটিই লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশে পণ্য বিক্রয়, বিপণন ও বাজারজাতকরণের কাজ শুরু করে।

    একই বছরের ৬ জুলাই ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শ্রীলঙ্কার হেমাস ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের বুকে বিক্রয় ও বিপণন শুরু করে।

    ২০০৭
  • মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনের জন্য ইউকেএমএইচআরএ (মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি) ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জিএমপির স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। যার ফলে আরও সহজে এসকেএফের মানসম্পন্ন ওষুধ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের বাজারে ঢুকে পড়ে।

    ২০০৮
  • ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে মারস ইন্টারন্যাশনাল ইডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড চুক্তিবদ্ধ হয়।

    ট্রান্সকম লিমিটেড ২৪ ঘণ্টার রেডিও স্টেশন এবিসি রেডিও (এফএম ৮৯.২) অধিগ্রহণ করে। এবিসি রেডিও বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় খবর ও বিনোদনভিত্তিক একটি রেডিও স্টেশন।

    ২০০৯
  • ট্রান্সকমের ইতিহাসে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড প্রথমবারের মতো পেপসিকোর গ্লোবাল ব্রাদার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পায়। সারা বিশ্বের মধ্যে সেরা ব্যবসায়িক সহযোগী হওয়ার কারণে পেপসিকো ট্রান্সকমকে এই সম্মাননা দেয়।

    ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এনারজাইজার মিডল ইস্ট অ্যান্ড আফ্রিকা লিমিটেড অব ইউএই ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    টিজিএ (থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অস্ট্রেলিয়ার স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। এতে করে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে পণ্য সরবরাহ শুরু হয়।

    ২০১০
  • বাংলাদেশের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভিএমডি (ভেটেরিনারি মেডিসিনি ডিরেক্টরেট) অব ইউনাইটেড কিংডমের স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বাজারে ভেটেরিনারি ওষুধ রপ্তানির দুয়ার খুলে যায়।

    বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর নিয়ে আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইব ব্যাংকিংয়ের স্বীকৃতি পায় টিবিএল প্ল্যান্ট। টিবিএল প্ল্যান্ট উৎপাদনের ক্ষেত্রে সব সময় ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’ ধরে রেখেছে।

    ২০১১
  • এসকেএফ ও বিশ্বের বৃহত্তম ইনসুলিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্কের চুক্তির মাধ্যমে এসকেএফ নভো নরডিস্কের জন্য ইনসুলিন বানানো শুরু করে। তখন থেকেই ইনসুলিন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এসকেএফ নভো নরডিস্কের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সহযোগী।

    ২০১২ সালের ১৮ মে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পান লতিফুর রহমান।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০১২ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রদানকারী।

    ২০১২
  • ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড (টিবিএল) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান অ্যাকুয়াফিনা পানির সঙ্গে বিশেষ বোতল তৈরির চুক্তি করে।

    ২০১৩
  • ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকাভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাবট হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, ইন্ডিয়া ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    প্রথমবারের মতো পেপসিকোর স্ন্যাকস ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে ট্রান্সকম কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম খাবার ও পানীয়র জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ড কুড়কুড়ে, লেই’স, লেই’স শেপস, কোয়াকার এবং ডরিটোসের উৎপাদন, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।

    ২০১৪
  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বছর ধরে লতিফুর রহমান সর্বোচ্চ করদাতার পুরস্কার পেয়েছেন।

    ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করদাতা খেতাব পেয়েছে।

    ২০১৬ ও ২০১৮ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।

    রূপগঞ্জে লতিফুর রহমান এসকেএফের নতুন একটি ওষুধ উৎপাদন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন।

    টিসিপিএল প্ল্যান্ট আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকিংয়ের (এআইবি) স্বীকৃতি পায়। ২০১৬ সালে এআইবির অঘোষিত খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক এক নিরীক্ষায় বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর পায় টিসিপিএল। পরবর্তী বছরগুলোতেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাফল্য ধরে রেখেছে।

    ২০১৬
  • ২০১৭ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড আবারও পেপসিকোর ‘গ্লোবাল  বটলার অব দ্য ইয়ার ২০১৬ অ্যাওয়ার্ড’ পায়। ওই বছর পেপসিকোর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও ইন্দ্রা নুয়ি বিশ্বের মধ্যে পেপসিকোর সেরা ব্যবসায়িক সহযোগী হিসেবে ট্রান্সকমের নাম ঘোষণা করেন।

    বাংলাদেশেই স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের টিভি উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেড অত্যাধুনিক প্রযুক্তির লিকুইড ক্রিস্টাল মডিউলের (এলসিএম) ব্যবহার শুরু করে। বৈশ্বিকভাবে এটিই ছিল স্যামসাংয়ের প্রথম যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে উৎপাদনের চুক্তি।

    ব্যবসা–বাণিজ্য খাতের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সততার চর্চার জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দ্য ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউকেবিসিসিআই) লতিফুর রহমানকে ‘দ্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে।

    ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লতিফুর রহমানের পরিবারকে ‘ট্যাক্স আইকন ফ্যামিলি’ (কর বাহাদুর পরিবার) হিসেবে ঘোষণা করে।

    বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য সেরা মানের ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে এসকেএফ বাংলাদেশে আধুনিক সুযোগ–সুবিধাসম্পন্ন কারখানা ভবন ‘ফারাজ আইয়াজ হোসেন ভবন’–এর উদ্বোধন করেন।

    ২০১৭
  • লতিফুর রহমানের উপস্থিতিতে এসকেএফ ও নভো নরডিস্কের মধ্যে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক পেনফিল ইনসুলিন উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির আওতায় এসকেএফ বাংলাদেশেই নভো নরডিস্কের উন্নত মানের ইনসুলিন উৎপাদন করবে।

    ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে এসকেএফ নিজেদের অত্যাধুনিক প্ল্যান্টে উৎপাদিত অ্যান্টি–ক্যানসার পণ্য বের করে। যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএমপি স্বীকৃত প্রথম ও একমাত্র অ্যান্টি–ক্যানসার উৎপাদনকারী পণ্যের প্ল্যান্ট।

    ২০১৮
  • যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনকারী ওয়ার্লপুলের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের যৌথ মালিকানায় ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট গ্লোবাল অ্যাপ্লায়েন্স লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়।

    ২০১৯
  • লতিফুর রহমান বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য প্রতিনিয়ত সচেষ্ট ছিলেন। এসকেএফ রপ্তানির পরিধি বাড়িয়ে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বের ৬৩ দেশে তাদের বিশ্বমানের ওষুধ পৌঁছে গেছে।

    লতিফুর রহমান ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সব সময় সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিশ্বাস করতেন। করোনা মহামারির ক্রান্তিকালে এসকেএফ বিশ্বের প্রথম জেনেরিক রেমডেসিভির ইনজেকশন চালু করে। কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় রেমডেসিভির জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মানবতার সেবায় ও সারা বিশ্বের করোনায় আক্রান্ত হাজারো রোগীকে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচাতে এই ব্র্যান্ডের ওষুধ চালু করা হয়েছে।

    ২০২০

ব্যক্তিগত

  • ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জনাব লতিফুর রহমান ১৯৪৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির একটি সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জনাব মজিবুর রহমান চা ও পাটশিল্পে বিশেষ ব্যবসায়িক অবদানের কারণে ‘খান বাহাদুর’ উপাধি পেয়েছিলেন।

    ১৯৪৫
  • ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলের মধ্য দিয়ে লতিফুর রহমানের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। এরপর তিনি ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমুন্ড স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষা দেন।

    ১৯৫৬
  • ১৯৬৫ সালে শাহনাজ রহমানকে বিয়ে করেন লতিফুর রহমান। তাঁরা একই সঙ্গে কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের কোলজুড়ে এসেছে তিন মেয়ে—সিমিন রহমান, শাজরেহ হক, শাজনীন রহমান এবং এক ছেলে—আরশাদ ওয়ালিউর রহমান।

    ১৯৬৫
  • ঢাকায় ফিরে আসার পর লতিফুর রহমান চাঁদপুরের পারিবারিক পাটকল ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডে নির্বাহী হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি সরাসরি কারখানায় কাজ করতেন। মূলত পাটকল পরিচালনার খুঁটিনাটি বিষয় সরাসরি সামনে থেকে দেখা ও শেখার মাধ্যমেই তাঁর পেশাজীবন শুরু হয়।

    ১৯৬৬
  • এই বছর লতিফুর রহমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। কারণ, এ বছরই রহমান পরিবারের সবচেয়ে বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মূল আয়ের উৎস ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডকে সরকার জাতীয়করণ করে। ওই সময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাট একটি বৃহৎ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতো। ১৯৪৭-৪৮ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট রপ্তানি হওয়া পাটের মধ্যে ৮০ শতাংশই পূর্ব বাংলা থেকে রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৪৬ শতাংশই এসেছিল পাট থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সরকার দেশের পাটকলগুলোকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে এনে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয়।

    দেশের প্রতিষ্ঠিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া লতিফুর রহমান এবার বাধ্য হয়ে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করলেন। অতঃপর ১৯৭২ সালের ৬ মে টি হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালুর মাধ্যমে চা রপ্তানির ব্যবসায় নাম লেখান লতিফুর রহমান। টি হোল্ডিংস লিমিটেড বর্তমানে ট্রান্সকম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

    ১৯৭২
  • লতিফুর রহমান বাংলদেশ এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিইএ) সভাপতি নির্বাচিত হন। সংগঠনটি বর্তমানে বাংলদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) নামে পরিচিত। ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাস থেকে ১৯৯১ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৮৯
  • ১৯৯৩ সালে লতিফুর রহমান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অভিজাত ব্যবসায়ী সংগঠন দ্য মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩, ১৯৯৪, ২০০০, ২০০১, ২০০৬, ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে ৭ মেয়াদে তিনি এমসিসিআইয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৩
  • একই বছরের ৯ অক্টোবর লতিফুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ২৪ বছর ধরে তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৪
  • লতিফুর রহমান ও শাহনাজ রহমানের ছোট মেয়ে শাজনীন রহমান ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল মাত্র ১৬ বছর বয়সে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

    ১৯৯৮
  • ২০০০ সালে লতিফুর রহমান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত টানা ৯ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০০
  • ২০০১ সালে লতিফুর রহমান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। এরপর থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি সদস্য পদে বহাল থাকেন।

    ২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমান মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতি’ শীর্ষক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

    ২০০১
  • ২০০২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেস্ট বিজনেস এক্সিকিউটিভ অব দ্য ইয়ার পুরস্কার লাভ করেন।

    ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সম্মানিত সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়।

    ২০০২
  • ২০০৩-২০০৪ মেয়াদে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন লতিফুর রহমান। পরে ২০০৪-২০০৫, ২০০৭-২০০৮ এবং ২০০৮-২০০৯ মেয়াদেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লতিফুর রহমান বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের গভর্নিং বডির মনোনীত সদস্য ছিলেন।

    ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চার মেয়াদে লতিফুর রহমান শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের সহায়ক সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশের অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৩
  • ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) বোর্ডের ‘সম্মানিত সদস্য’ ছিলেন লতিফুর রহমান।

    ২০০৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত লতিফুর রহমানকে ‘সম্মানিত সদস্য’ পদে মনোনীত করে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।

    ২০০৭
  • ২০০৮ সালের ২৩ জুন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশ বেটার বিজনেস ফোরামের ‘সম্মানিত সদস্য’ পদের জন্য নির্বাচিত করে।

    ২০০৮
  • ২০০৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমান ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে টানা ১১ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০৯
  • ২০১২ সালের ৭ মে লতিফুর রহমানকে অসলো বিজনেস পিস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে নরওয়েভিত্তিক বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন, অসলো। ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ ও ন্যায়পরায়ণ একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এখানে। ব্যবসা-বাণিজ্যের দুনিয়ায় এই পুরস্কারকে অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিচারকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ একটি দল এই পুরস্কারের বিজয়ী নির্ধারণ করে থাকে।

    লতিফুর রহমান ছাড়া এখন পর্যন্ত টাটা গ্রুপ অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যন রতন টাটা (২০১০), ভার্জিন গ্রুপের সিইও স্যার রিচার্ড ব্যানসন (২০১৪), টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কসহ (২০১৭) বিশ্বের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন।

    ২০১২ সালের ১৮ মে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পান লতিফুর রহমান।

    ২০১২
  • ২০১৪ সালের ২৭ জুন জেনেভায় আয়োজিত প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) ২০২তম সভায় লতিফুর রহমান তিন বছরের জন্য এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হন।

    ২০১৪
  • মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালে লতিফুর অ্যান্ড শাহনাজ ফাউন্ডেশনের সূচনা হয়। এখন পর্যন্ত আর্থিকভাবে অসচ্ছল অসংখ্য ক্যানসার রোগীর চিকিৎসার খরচ দিয়েছে এই ফাউন্ডেশন।

    ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় বন্ধুদের বাঁচাতে লতিফুর রহমানের নাতি ও বড় মেয়ে সিমিন রহমানের ছোট ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন নিহত হন। সেখানে দুই বন্ধুকে বাঁচাতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে বরণ করেছিলেন তরুণ ফারাজ।

    ২০১৬
  • দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৭ সালে প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন লতিফুর রহমান।

    লতিফুর রহমান পেশাগত ক্ষেত্রে সামাজিক দায়িত্ববোধ আর ন্যায়পরায়ণতার অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করে ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই ‘সার্ক আউটস্ট্যান্ডিং লিডার’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। ভারতের বাইরের প্রথম দেশের কোনো নাগরিক হিসেবে তিনি এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

    ব্যবসা–বাণিজ্য খাতের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সততার চর্চার জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দ্য ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউকেবিসিসিআই) লতিফুর রহমানকে ‘দ্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে।

    ২০১৭
  • ২০২০ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চেওরা গ্রামে নিজ বাড়িতে লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বনানী কবরস্থানে মেয়ে শাজনীন রহমান ও নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।

    ২০২০

প্রাতিষ্ঠানিক

  • ১৩৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৮৮৫ সালে ট্রান্সকমের চা-বাগান আর পাটকলের মধ্য দিয়ে ট্রান্সকমের (তৎকালীন জলঢাকা টি এস্টেট, ডুয়ার্স, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ) ঐতিহ্যের সূচনা হয়। পাটকল ও অন্যান্য ব্যবসার জাতীয়করণের পর ১৯৭৩ সালে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে ট্রান্সকমকে বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায় গ্রুপে পরিণত করেছেন। ট্রান্সকম ২০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার বার্ষিক লেনদেনের (টার্নওভার) রেকর্ড গড়েছে। ওষুধ, পানীয়, ইলেকট্রনিকস, ভোগ্যপণ্য, চা এবং গণমাধ্যমসহ অন্যান্য ক্ষেত্র মিলিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপ বর্তমানে দেশের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয়, দ্রুত বর্ধনশীল এবং বৈচিত্র্যময় একটি ব্যবসায়িক গ্রুপ হিসেবে পরিচিত। সূচনালগ্ন থেকেই দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণ ট্রান্সকম গ্রুপকে বিশেষ এক উচ্চতায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।

    ১৮৮৫
  • ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রহমান পরিবার রাজনগর টি এস্টেট, সাকেরা টি এস্টেট এবং বৃহত্তর সিলেটের উত্তরবাগ ও ইন্দুনগর টি এস্টেটের সঙ্গে জলঢাকা টি এস্টেট অদলবদল করার সিদ্ধান্ত নেন।

    ১৯৪৭
  • ক. সিলেট জেলার মনিপুর টি এস্টেটের মাধ্যমে ১৯৫৫ সালের ৫ জুলাই মনিপুর চা কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। কোম্পানিটি উন্নত যন্ত্রসমৃদ্ধ আধুনিক কারখানা এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগানে ৬৬ বছর ধরে গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে উন্নত মানের চা উৎপাদন করে আসছে।

    খ. মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার পাহাড়ি এলাকায় ১৯৬৫ সালে মেরিনা চা কোম্পানির পথচলা শুরু হয়। একইভাবে ৬৫ বছর ধরে এই কোম্পানিও আধুনিক কারখানা আর ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগানে মানসম্পন্ন চা উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।

    গ. ১৯৬২ সালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সাইফ টি এস্টেটের সঙ্গে যৌথভাবে আত্মপ্রকাশ করে এম রহমান চা কোম্পানি। ‘এ’ ক্যাটাগরির চা–বাগান আর আধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ কারখানায় ৫৯ বছর ধরে উন্নত মানের চা উৎপাদন করে আসছে কোম্পানিটি।

    ১৯৫৫
  • ১৯৬১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চাঁদপুরে ডব্লিউ রহমান জুট মিলস নামে প্রথম বাঙালি মালিকানাধীন পাটকল যাত্রা শুরু করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৬৬ দশমিক ৮৯ একর জায়গা নিয়ে কোম্পানিটি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মালিকানাধীন বৃহত্তম পাটকলে পরিণত হয়। লতিফুর রহমানের বাবা মজিবুর রহমান পরিচালিত ডব্লিউ রহমান পাটকলটি পরে পারিবারিক ব্যবসায় সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

    ১৯৬১
  • এই বছর লতিফুর রহমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। কারণ, এ বছরই রহমান পরিবারের সবচেয়ে বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মূল আয়ের উৎস ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডকে সরকার জাতীয়করণ করে। ওই সময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাট একটি বৃহৎ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতো। ১৯৪৭-৪৮ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট রপ্তানি হওয়া পাটের মধ্যে ৮০ শতাংশই পূর্ব বাংলা থেকে রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে ১৯৬৯-৭০ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ৪৬ শতাংশই এসেছিল পাট থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সরকার দেশের পাটকলগুলোকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে এনে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয়।

    দেশের প্রতিষ্ঠিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া লতিফুর রহমান এবার বাধ্য হয়ে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করলেন। অতঃপর ১৯৭২ সালের ৬ মে টি হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালুর মাধ্যমে চা রপ্তানির ব্যবসায় নাম লেখান লতিফুর রহমান। টি হোল্ডিংস লিমিটেড বর্তমানে ট্রান্সকম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

    ১৯৭২
  • সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের (দোলমার জিএমবিএইচ এসএ) সঙ্গে টি হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবসায়িক চুক্তির মাধ্যমে লতিফুর রহমানের প্রথম আন্তর্জাতিক বিনিময় ব্যবসার শুরু হয়। ব্যবসায়িক চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানি করতেন এবং কীটনাশক আমদানি করতেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক বিনিময় প্রথাভিত্তিক ব্যবসা।

    ব্যবসা পরিচালনাসংক্রান্ত কার্যক্রম আরও সহজ করতে ওই বছরই চট্টগ্রামে টি হোল্ডিংস লিমিটেডের একটি শাখা কার্যালয় চালু করা হয়।

    ১৯৭৩
  • বাংলাদেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে টি হোল্ডিংস লিমিটেড তাদের রপ্তানির পরিসর আরও বাড়ায়। এ বছর প্রতিষ্ঠানটি মিসরের সরকারি প্রতিষ্ঠান মিসর ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্টের মাধ্যমে মিসরে চা রপ্তানি শুরু করে। পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও পাকিস্তানে চা রপ্তানি শুরু করে টি হোল্ডিংস লিমিটেড।

    ১৯৭৭
  • আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যবসায়িক বিস্তৃতির অংশ হিসেবে টি হোল্ডিংস লিমিটেড এবার পেট্রোলিয়াম ও টেলিযোগাযোগ খাতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করে।

    ১৯৭৮
  • ১৯৮১ সালের ১০ মার্চ বর্তমান ট্রান্সকম গ্রুপের মূল প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়।

    এ বছরই লতিফুর রহমান বিশেষ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দ্রে অ্যান্ড সি নামের সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। এই বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তটি তাঁর ব্যবসাজীবনে আবারও সফলতা এনে দেয়, যা ট্রান্সকমের সম্ভাবনাময় যাত্রা আরও সহজ করে তোলে।

    ১৯৮১
  • লতিফুর রহমানের চেষ্টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান নেসলে প্রথমবারের মতো তাদের পণ্য বাংলাদেশে বিপণন শুরু করে। ওই সময় ট্রান্সকম লিমিটেড নেসলের সব ধরনের পণ্য বাংলাদেশে আমদানি ও পরিবেশনার বিশেষ স্বত্ব পায়।

    ১৯৮২
  • ১৯৮৩ সালের ১৯ জানুয়ারি সরকার ডব্লিউ রহমান জুট মিলসের সাবেক মালিক অর্থাৎ রহমান পরিবারের কাছে পাটকলের ৫১ শতাংশ মালিকানা ফিরিয়ে দেয় সরকার। পাটকলের বিরাষ্ট্রীয়করণ উদ্যোগের আওতায় বাকি ৪৯ শতাংশ মালিকানা পাট মন্ত্রণালয় রেখে দেয়।

    ১৯৮৩
  • ১৯৮৭ সালের ২১ অক্টোবর বিক্রয় ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিডিসিএল) যাত্রা শুরু করে। টিডিসিএল এখন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বিক্রয় ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভোগ্যপণ্য ব্র্যান্ড ওষুধ এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত যন্ত্রপাতির বিক্রয় ও পরিবেশক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

    ১৯৮৭
  • লতিফুর রহমানের প্রচেষ্টায় ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক ওষুধ প্রতিষ্ঠান অরগ্যানন হোল্ডিংস বিভি-এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান অরগ্যানন বাংলাদেশ (বর্তমানে নুভিসতা ফার্মা লিমিটেড) টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তাদের পণ্য বিপণন, বিক্রয় ও সরবরাহ শুরু করে।

    ২০ মার্চ রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিমা খাতে প্রবেশ করেন লতিফুর রহমান। তিনি ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এরপর ১৯৮৯, ১৯৯৭ ও ২০০৫ সালেও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৮৮
  • যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্কুইব ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাওরোজ ওয়েলকাম অ্যান্ড কোম্পানি তাদের সব ধরনের পণ্য টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিপণন, বিক্রয় ও সরবরাহ শুরু করে।

    টিডিসিএল এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়ক প্রতিষ্ঠান স্মিথক্লাইন অ্যান্ড ফ্রেঞ্চের (এসকেঅ্যান্ডএফ) পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশনার সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ১৯৮৯
  • ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্মিথক্লাইন অ্যান্ড ফ্রেঞ্চের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচাম কোম্পানির সংযুক্ত হওয়ার সময় এসকেএফের বাংলাদেশ অংশের পরিচালনার ভার ট্রান্সকম অধিগ্রহণ করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের ঘটনা। প্রতিষ্ঠানটি ট্রান্সকম অধিগ্রহণের পর এটির নাম হয় এসকেএফ বাংলাদেশ। পরে এটির নাম পরিবর্তন করে হয় এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এসকেএফ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও দ্রুত বর্ধনশীল ওষুধ কোম্পানি।

    ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে নাম লেখান লতিফুর রহমান। মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের মালিকানায় ১৯৯১ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ও সর্বাধিক উদ্ধৃত ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা।

    ১৯৯০
  • সুইজারল্যান্ডভিত্তিক স্যান্ডোজ ফার্মা টিডিসিএলের মাধ্যমে বাংলাদেশে পণ্য বিপণন, বিক্রয় ও পরিবেশনা শুরু করে।

    ১০ বছরের ধারবাহিক ব্যবসায়িক উন্নতির পর ১৯৯২ সালের ৪ মার্চ নেসলে এসএ এবং ট্রান্সকম লিমিটেডের যৌথ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। সূচনালগ্নে ওই বছরের ১২ জুন লতিফুর রহমান কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।

    ১৯৯২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ট্রান্সকম গ্রুপ নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এনভির সহায়ক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেডের একটি বড় অংশ অধিগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ফিলিপসের বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় করত। দেশের ইতিহাসে তখন এটিই ছিল ঋণসুবিধা ব্যবহার করে কোম্পানি অধিগ্রহণের সবচেয়ে বড় ঘটনা।

    একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের একটি বড় অংশ অধিগ্রহণ করে ট্রান্সকম গ্রুপ। বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তখন জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্র্যান্ড ফিলিপসের উৎপাদন ও বিপণন করত।

    একই বছরের ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সব সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস এনভির সহায়ক প্রতিষ্ঠান ফিলিপস বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে ট্রান্সকম গ্রুপ।

    ১৯৯২
  • ট্রান্সকম লিমিটেড ও ফিলিপস বাংলাদেশের যৌথ চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ৪ মার্চ ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকসের যাত্রা শুরু হয়।

    সুইজারল্যান্ডভিত্তিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান নেসলের পণ্য উৎপাদনের জন্য ১৯৯৩ সালে লতিফুর রহমান গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি কারখানা চালু করেন। ওই বছরের ৪ নভেম্বর থেকে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশেই তাদের পণ্য উৎপাদন শুরু করে। এরপর ১৯৯৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখাসংবলিত চালানটি তৈরি করা হয়।

    ১৯৯৩
  • ১৯৯৪ সালের পয়লা মার্চ থেকে ফরাসি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লেস ল্যাবরেটরিজ সার্ভিয়ার ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাদের পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশন শুরু করে।

    ১৯৯৪
  • ফিলিপস এনভির সঙ্গে আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৫ সালের ১ মার্চ ট্রান্সকম লিমিটেড বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেডের ট্রেডমার্ক লাইসেন্স অধিগ্রহণ করে। একই দিনে ট্রান্সকম লিমিটেড ফিলিপস লাইটিং হোল্ডিং বিভির সঙ্গে আরেকটি নতুন চুক্তি করে যেন বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ও ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ফিলিপস ব্র্যান্ডের ট্রেডমার্ক লাইসেন্স নিতে পারে। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড ফিলিপস ব্র্যান্ডের ট্রেডমার্ক ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক লাইটিং পণ্য উৎপাদনের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়।

    ১৯৯৫
  • ফরাসি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ল’রিয়াল প্যারিস ট্রান্সকম লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১৯৯৬ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে তাদের পণ্য বিক্রয় ও বাজারজাত করা শুরু করে।

    ১৯৯৬
  • পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা নেসলে এসএর কাছে বিক্রি করে দেয় ট্রান্সকম লিমিটেড। ওই সময় নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড নেসলের শতভাগ সহায়ক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। যদিও মালিকানা বিক্রির পরেও নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে লতিফুর রহমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি টানা ২৫ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে তিনি ২০১৭ সালে স্বেচ্ছায় এই দায়িত্ব থেকে সরে আসেন।

    ১৯৯৮ সালে মিডিয়াস্টার লিমিটেডের অধীনে প্রথম আলো যাত্রা শুরু করে। যেটি বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রকাশিত ও পঠিত দৈনিক পত্রিকা। দেশের বাইরেও প্রকাশিত হয় প্রথম আলো। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকা সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট (www.prothomalo.com) বর্তমানে পৃথিবীর এক নম্বর বাংলা ও বাংলাদেশি ওয়েবসাইট। অ্যালেক্সা র‍্যাংকিংয়ে প্রথম আলো বাংলাদেশের চতুর্থ ও পৃথিবীর সেরা ৫০০ ওয়েবসাইটের মধ্যে অবস্থান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো ভাষার গণমাধ্যম ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রথম আলো ডটকমের অবস্থান পঞ্চম। প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ১ কোটি ৩০ লাখ নিয়মিত পাঠক ও ১০০ কোটি অ্যাড ইমপ্রেশন রয়েছে। প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে দেড় কোটির বেশি লাইক আছে। এ ছাড়াও মিডিয়াস্টার লিমিটেডের রয়েছে মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর আলো, বিজ্ঞানচিন্তা, ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন প্রতিচিন্তা এবং প্রকাশনা সংস্থা প্রথমা প্রকাশন।

    এ ছাড়া রয়েছে এবিসি ৮৯.২ এফএম রেডিও স্টেশন। ২০২১ সালের ১২ জুলাই যাত্রা শুরু করেছে ডিজিটাল বিনোদনের নতুন ধারা ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম চরকি।

    লতিফুর রহমান অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক সিমেন্ট কোম্পানি হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেডের (আগের নাম হুন্দাই সিমেন্ট) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি ১৮ বছর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯৮
  • ১৯৯৯ সালের ৪ নভেম্বর ট্রান্সকম গ্রুপের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড ছাপাখানা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। উন্নত ও দ্রুত মুদ্রণ প্রযুক্তির ছাপাখানা এটি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় এর ছাপাখানা রয়েছে।

    ১৯৯৯
  • ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড (টিবিএল) ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (তালিকাভুক্ত নয়) হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের (বিবিআইএল) কাছ থেকে পেপসিকো অধিগ্রহণ করে টিবিএল। তখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান পেপসিকোর ফ্র্যাঞ্চাইজি পায় টিবিএল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত পেপসি, সেভেনআপ, মিরিন্ডা, মাউন্টেন ডিউ, পেপসি ডায়েট, ট্রপিকানা ফ্রুটস ও স্লাইসের উৎপাদন, বিপণন ও পরিবেশনা করে আসছে টিবিএল।

    ২০০০
  • টঙ্গীতে অবস্থিত গ্লোবাল বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ব্রিস্টল-মায়ার্স স্কুইবের উৎপাদন কারখানা অধিগ্রণ করে এসকেএফ। বর্তমানে এটি এসকেএফের প্রধান কারখানা।

    পোলট্রি, গবাদি ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরির পরিকল্পনা প্রাণিস্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যবসায় নামে এসকেএফ।

    ২০০১
  • পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেপসিকোর ব্র্যান্ড লেইস চিপস বাংলাদেশে বিক্রয় ও পরিবেশন শুরু করে।

    অ্যালারগান-হংকং লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের পণ্য বিক্রয় ও পরিবেশনের কাজ শুরু করে।

    সিঙ্গাপুরের ব্যবসা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিঙ্গাপুর ট্রেড ডেভেলপমেন্ট বোর্ড লতিফুর রহমানকে বাংলাদেশের সম্মানিত ব্যবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করে। ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ছয় বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ২০০২
  • ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। ট্রান্সকম ফুডস তখন ইয়ামের বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়, যা পরবর্তীতে আমেরিকান চেইন রেস্টুরেন্ট পিৎজা হাটের সঙ্গে যাত্রা শুরু করে। পিৎজা হাট বাংলাদেশে প্রথম আন্তর্জাতিক চেইন রেস্টুরেন্ট।

    ২০০৩ সাল থেকে এসকেএফ আন্তর্জাতিক বাজারে ওষুধ রপ্তানি করা শুরু করে।

    ২০০৩
  • এসকেএফের ডেডিকেটেড অ্যান্টিবায়োটিক প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন লতিফুর রহমান।

    ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর হেইঞ্জ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ২০০৫
  • ইয়াম! ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ডের বিস্তৃতি হিসেবে ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেড কেএফসি চালু করে। সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৬টি পিৎজা হাট ও ২৩টি কেএফসি আউটলেট চালু করেছে।

    ২০০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লিনডে বাংলাদেশ লিমিটেডের (আগের নাম বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেড) পরিচালক মনোনীত হন। ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

    ইনসুলিনের পথপ্রদর্শক ডেনমার্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক এসএ ২০০৬ সালের ৯ মার্চ তাদের পণ্য বাংলাদেশে বিক্রয় ও পরিবেশনের জন্য ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    ২০০৬
  • ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি জার্মানভিত্তিক কোম্পানি হেটিচ এশিয়া প্যাসিফিক পিটিই লিমিটেড ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশে পণ্য বিক্রয়, বিপণন ও বাজারজাতকরণের কাজ শুরু করে।

    একই বছরের ৬ জুলাই ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শ্রীলঙ্কার হেমাস ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের বুকে বিক্রয় ও বিপণন শুরু করে।

    ২০০৭
  • মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনের জন্য ইউকেএমএইচআরএ (মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি) ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জিএমপির স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। যার ফলে আরও সহজে এসকেএফের মানসম্পন্ন ওষুধ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের বাজারে ঢুকে পড়ে।

    ২০০৮
  • ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে মারস ইন্টারন্যাশনাল ইডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড চুক্তিবদ্ধ হয়।

    ট্রান্সকম লিমিটেড ২৪ ঘণ্টার রেডিও স্টেশন এবিসি রেডিও (এফএম ৮৯.২) অধিগ্রহণ করে। এবিসি রেডিও বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় খবর ও বিনোদনভিত্তিক একটি রেডিও স্টেশন।

    ২০০৯
  • ট্রান্সকমের ইতিহাসে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড প্রথমবারের মতো পেপসিকোর গ্লোবাল ব্রাদার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পায়। সারা বিশ্বের মধ্যে সেরা ব্যবসায়িক সহযোগী হওয়ার কারণে পেপসিকো ট্রান্সকমকে এই সম্মাননা দেয়।

    ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এনারজাইজার মিডল ইস্ট অ্যান্ড আফ্রিকা লিমিটেড অব ইউএই ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    টিজিএ (থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অস্ট্রেলিয়ার স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। এতে করে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে পণ্য সরবরাহ শুরু হয়।

    ২০১০
  • বাংলাদেশের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভিএমডি (ভেটেরিনারি মেডিসিনি ডিরেক্টরেট) অব ইউনাইটেড কিংডমের স্বীকৃতি পায় এসকেএফ। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বাজারে ভেটেরিনারি ওষুধ রপ্তানির দুয়ার খুলে যায়।

    বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর নিয়ে আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইব ব্যাংকিংয়ের স্বীকৃতি পায় টিবিএল প্ল্যান্ট। টিবিএল প্ল্যান্ট উৎপাদনের ক্ষেত্রে সব সময় ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’ ধরে রেখেছে।

    ২০১১
  • এসকেএফ ও বিশ্বের বৃহত্তম ইনসুলিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্কের চুক্তির মাধ্যমে এসকেএফ নভো নরডিস্কের জন্য ইনসুলিন বানানো শুরু করে। তখন থেকেই ইনসুলিন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এসকেএফ নভো নরডিস্কের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সহযোগী।

    ২০১২ সালের ১৮ মে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পান লতিফুর রহমান।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০১২ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রদানকারী।

    ২০১২
  • ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড (টিবিএল) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক খাদ্য ও পানীয় প্রতিষ্ঠান অ্যাকুয়াফিনা পানির সঙ্গে বিশেষ বোতল তৈরির চুক্তি করে।

    ২০১৩
  • ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকাভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাবট হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, ইন্ডিয়া ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।

    প্রথমবারের মতো পেপসিকোর স্ন্যাকস ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে ট্রান্সকম কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম খাবার ও পানীয়র জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ড কুড়কুড়ে, লেই’স, লেই’স শেপস, কোয়াকার এবং ডরিটোসের উৎপাদন, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।

    ২০১৪
  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বছর ধরে লতিফুর রহমান সর্বোচ্চ করদাতার পুরস্কার পেয়েছেন।

    ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করদাতা খেতাব পেয়েছে।

    ২০১৬ ও ২০১৮ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।

    রূপগঞ্জে লতিফুর রহমান এসকেএফের নতুন একটি ওষুধ উৎপাদন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন।

    টিসিপিএল প্ল্যান্ট আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকিংয়ের (এআইবি) স্বীকৃতি পায়। ২০১৬ সালে এআইবির অঘোষিত খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক এক নিরীক্ষায় বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর পায় টিসিপিএল। পরবর্তী বছরগুলোতেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাফল্য ধরে রেখেছে।

    ২০১৬
  • ২০১৭ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড আবারও পেপসিকোর ‘গ্লোবাল  বটলার অব দ্য ইয়ার ২০১৬ অ্যাওয়ার্ড’ পায়। ওই বছর পেপসিকোর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও ইন্দ্রা নুয়ি বিশ্বের মধ্যে পেপসিকোর সেরা ব্যবসায়িক সহযোগী হিসেবে ট্রান্সকমের নাম ঘোষণা করেন।

    বাংলাদেশেই স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের টিভি উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেড অত্যাধুনিক প্রযুক্তির লিকুইড ক্রিস্টাল মডিউলের (এলসিএম) ব্যবহার শুরু করে। বৈশ্বিকভাবে এটিই ছিল স্যামসাংয়ের প্রথম যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে উৎপাদনের চুক্তি।

    ব্যবসা–বাণিজ্য খাতের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সততার চর্চার জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দ্য ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউকেবিসিসিআই) লতিফুর রহমানকে ‘দ্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে।

    ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লতিফুর রহমানের পরিবারকে ‘ট্যাক্স আইকন ফ্যামিলি’ (কর বাহাদুর পরিবার) হিসেবে ঘোষণা করে।

    বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য সেরা মানের ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে এসকেএফ বাংলাদেশে আধুনিক সুযোগ–সুবিধাসম্পন্ন কারখানা ভবন ‘ফারাজ আইয়াজ হোসেন ভবন’–এর উদ্বোধন করেন।

    ২০১৭
  • লতিফুর রহমানের উপস্থিতিতে এসকেএফ ও নভো নরডিস্কের মধ্যে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক পেনফিল ইনসুলিন উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির আওতায় এসকেএফ বাংলাদেশেই নভো নরডিস্কের উন্নত মানের ইনসুলিন উৎপাদন করবে।

    ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে এসকেএফ নিজেদের অত্যাধুনিক প্ল্যান্টে উৎপাদিত অ্যান্টি–ক্যানসার পণ্য বের করে। যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএমপি স্বীকৃত প্রথম ও একমাত্র অ্যান্টি–ক্যানসার উৎপাদনকারী পণ্যের প্ল্যান্ট।

    ২০১৮
  • যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনকারী ওয়ার্লপুলের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের যৌথ মালিকানায় ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট গ্লোবাল অ্যাপ্লায়েন্স লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়।

    ২০১৯
  • লতিফুর রহমান বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য প্রতিনিয়ত সচেষ্ট ছিলেন। এসকেএফ রপ্তানির পরিধি বাড়িয়ে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বের ৬৩ দেশে তাদের বিশ্বমানের ওষুধ পৌঁছে গেছে।

    লতিফুর রহমান ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সব সময় সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিশ্বাস করতেন। করোনা মহামারির ক্রান্তিকালে এসকেএফ বিশ্বের প্রথম জেনেরিক রেমডেসিভির ইনজেকশন চালু করে। কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় রেমডেসিভির জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মানবতার সেবায় ও সারা বিশ্বের করোনায় আক্রান্ত হাজারো রোগীকে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচাতে এই ব্র্যান্ডের ওষুধ চালু করা হয়েছে।

    ২০২০